প্রকাশিত: Tue, May 28, 2024 3:41 PM
আপডেট: Sun, Jun 22, 2025 6:39 AM

আশা করছি, ভবিষ্যতে সাংবাদিকদের জন্য অভিনয় জানা বাধ্যতামূলক করা হবে!

আমিনুল ইসলাম

ভাবলামÑঘূর্ণিঝড়ের খবর নেওয়া যাক। টেলিভিশন খুলতেই দেখি এক চ্যানেলের রিপোর্টার লাইভে আছেন। অনেক দর্শনার্থী এই ঝড়ের মাঝেও সমুদ্রে নেমে গোসল করছেন। রিপোর্টার নিজেও সমুদ্রে নেমে একজনকে জিজ্ঞেস করতে যাবেন, আপনি কেন সমুদ্রে নেমেছেন? কিন্তু জিজ্ঞেস করতে গিয়ে পাশেই আরেকটা বাচ্চা ছেলে ক্যামেরার সামনে চলে এসেছে। এই রিপোর্টার কি করেছে জানেন? ওই বাচ্চা ছেলেকে রীতিমতো ধাক্কা দিয়ে দূরে সরিয়ে দিয়েছে। বাচ্চা ছেলেটা ১০ (২/৩) মিটার দূরে গিয়ে সমুদ্রে আছড়ে পড়েছে। এই দৃশ্য আবার আমি সরাসরি দেখে ফেলেছি দেখে তো আমার চোখ কপালে ওঠার জোগাড়। 

বিকেল বেলায় আবার ছাড়লাম আপডেট নেওয়ার জন্য। দেখি একই সাংবাদিক আবারও লাইভে আছেন।

এবার তিনি লাইভে দাঁড়িয়ে বলেছেন কুয়াকাটায় একজন দর্শনার্থী ঘূর্ণিঝড় দেখতে এসেছিলেন। জলোচ্ছ্বাসে তাঁর মোবাইল সমুদ্রে ভেসে গিয়েছে। খানিক আগে আবার টেলিভিশন খুলেছি। এবার দেখি ওই সাংবাদিক সমুদ্রের নিচে অর্ধেক ডুবে আছেন! বাকি অর্ধেক দেখা যাচ্ছে। দেখে তো আমার চোখ কপালে ওঠার জোগাড়। ভাবছিলাম তিনি কি ডুবে যাচ্ছেন নাকি! এরপর শুনি তিনি লাইভে এসে বলছেন, কেউ সমুদ্রে নামবেন না। আমি সমুদ্রে নেমে আপনাদের সবাইকে সতর্ক করছি। সমুদ্র কতটা উত্তাল রয়েছে দেখতেই তো পাচ্ছেন। এসব দেখে ভাবলাম বাংলাদেশিদেরই মনে হয় এমন অবস্থা। তো, কলকাতার একটা নিউজ চ্যানেল খুলেছি। সেখনে দেখি রীতিমতো চিল্লাতে চিল্লাতে এক সাংবাদিক লাইভে এসেছেন।

তিনিও পানিতে ডুবে আছেন। তাঁর কেবল কাঁধটাই দেখা যাচ্ছে। সেই কাঁধে একটা ব্যাঙ বসে আছে। মাঝ বয়সী সাংবাদিক ভদ্রলোক চিৎকার করতে করতে লাইভে বলছেন, অবুঝ প্রাণিটা পর্যন্ত বেঁচে থাকার জন্য নিরাপদ আশ্রয় হিসেবে আমার কাঁধকে বেছে নিয়েছে।

 কেউ বাইরে বের হবেন না। অথচ ভদ্রলোক নিজেই পানিতে নেমে অর্ধেক ডুবে আছেন। এসব দেখে আমি ভাবছিলাম, পৃথিবী কতটা বদলে গিয়েছে। আগে সাংবাদিকরা রিপোর্ট করতো ফ্যাক্টের ওপর ভিত্তি করে। এখন সব বাদ দিয়ে এদের কেউ নদীতে ঝাঁপ দিচ্ছেন। কেউ অন্যকে ঝাঁপ দেওয়াচ্ছে। কেউ আবার কাঁধে ব্যাঙ নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। আশা করছি ভবিষ্যতে সাংবাদিকদের জন্য অভিনয় জানা বাধ্যতামূলক করা হবে। ফেসবুক থেকে